অতিরিক্ত বুক ধড়ফড় করা নিয়ে টেনশন করছেননা এমন লোক খুব কমই আছে। অনেকেরই বুক অতিরিক্ত ধরফড় করে। সেই সঙ্গে প্রচুর পরিমান ঘাম বের হয়। এমন সমস্যা দেখা দিলে অনেকেই ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এতে সমস্যা আরও জটিল হয়।
বুক ধড়ফড়ের কারণ ও প্রতিকার নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন মেডিনোভা হাসপাতালের কার্ডিওলজিস্ট অধ্যাপক ডা. মো. তৌফিকুর রহমান ফারুক।
তাঁর মতে সাধারণত হৃদযন্ত্রের কিছু কিছু অসুখে বুক ধড়ফড় করতে পারে। আবার হরমোনজনিত কারণে অথবা অতিরিক্ত ভয় ও দুশ্চিন্তা ইত্যাদি কারণেও বুক ধড়ফড় করতে পারে।
আরো পড়ুন: ডিজিটাল জন্মসনদ সংগ্রহে ভোগান্তি, শিক্ষার্থীদের টিকা নিয়েও অনিশ্চয়তা
কোন অসুখ ছাড়া স্বাভাবিক কারণেও বুক ধড়ফড় করতে পারে, যেমন— ব্যায়াম করলে, অতিরিক্ত পরিশ্রম করলে, দৌড়া-দৌড়ির কারণে, প্রেগন্যান্সির সময় এমনটি হয়ে থাকে। অতিরিক্ত চা পান, কফি পান বা মদ্যপান করলেও বুক ধড়ফড় বৃদ্ধি পেতে পারে।
বুক ধড়ফড় বৃদ্ধি পেতে যদি কেউ কোকেন বা অ্যামফিটামিনজাতীয় ওষুধ খায় বা নেশা করে। এমনকি ইয়াবা খেলেও বুক ধড়ফড়ের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।
হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে অর্থাৎ রক্তের সুগারের পরিমান কমে গেলে, রক্তশূন্যতা দেখা দিলে, রক্তচাপ কমে গেলে, জ্বর হলে— এমনকি পানিশূন্যতা দেখা দিলে বুক ধড়ফড় করতে পারে।
অ্যাজমার ওষুধ, ওজন কমানোর ওষুধ বা নাকের সর্দির ড্রপ এমনকি থাইরয়েডের ওষুধের ডোজের মাত্রা বেশি হলে বুক ধড়ফড় বৃ্দ্ধি পেতে পারে।
হার্টঅ্যাটাক হলে, হার্ট ফেইলিউর হলে, হৃদযন্ত্রের মাংসপেশিতে সমস্যা হলে, হার্টে রোগীর অনিয়মিত হৃদস্পন্দন হলে, রক্তনালিতে ব্লকেজ থাকলে, হার্টের ভাল্বে সমস্যা হলে অতিরিক্ত বুক ধড়ফড় করতে পারে।
কী করবেন?
প্রথমেই আপনার জানা উচিত কী কারণে আপনার বুক ধড়ফড় বেশি হয়। যদি অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার কারণে হয়, তবে দুশ্চিন্তা পরিহার করা উচিত।
অতিরিক্ত চা পান বা ধূমপান বা কফি পানের অভ্যাস থাকলে তা পরিহার অথবা অল্প পরিমাণে পান করা যেতে পারে।
এ ছাড়া কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বুক ধড়ফড়ের প্রকৃত কারণ বের করা যায়। যেমন- ইসিজি, ইকো-কার্ডিওগ্রাম, ইটিটি, থাইরয়েড ফাংশন পরীক্ষা ও ইপি (ইলেকট্রোফিজিওলজি) পরীক্ষা।
তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা ও ডিপ্রেশন এর কারনে সমস্যাটি বাড়তে পারে। সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা ও ডিপ্রেশন পরিহার করা জরুরী।
বিভিন্ন রকমের যোগ-ব্যায়াম ও অ্যারোমা থেরাপি নেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া ধূমপান ত্যাগ করতে হবে, এটি সবসময়ই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
মাত্রাতিরিক্ত কফি, চা বা পান বর্জন করতে হবে। যে কোনো ধরনের নেশাজাতীয় দ্রব্য, কোমল পানীয় পান পরিহার করতে হবে।